রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন যতোই দীর্ঘ হচ্ছে, ততোই ব্যবস্থাপনা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে। নিজ দেশে ফেরার অনিশ্চিয়তায় চরম হতাশায় রোহিঙ্গারা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রত্যাশা অনুযায়ী আন্তর্জাতিক মহলের ত্রাণ সহায়তা না পাওয়ায় বিশাল এই জনগোষ্ঠীর থাকা-খাওয়াসহ নানা প্রয়োজন মেটানো কঠিন হয়ে পড়ছে। আর কবে থেকে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরু হবে সে প্রশ্নের উত্তরও জানা নেই কারো।
১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বসবাস করছে কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ায়। মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসাদের সাময়িক এই বসতিতে কাটছে উদ্বাস্তু জীবন।
আসমত উল্লাহ নামের শিশুটির জন্ম দু’মাস আগে উখিয়ার মধ্যছড়া রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরে। মিয়ানমার থেকে প্রাণভয়ে পালিয়ে আসা আয়েশা বেগম এখন দিশেহারা। এক বছর ধরে উদ্বাস্তু জীবন কাটছে বন্দীশালার মধ্যে।
তিনি বলেন, ‘মা হিসেবে শিশুটির যেভাবে যত্ন নেয়া উচিত তা পারছি না। কারণ কোনো আয় রোজগার নেই।’
রোহিঙ্গা শিবিরে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়া আবুল কাশেমের কাটছে অলস জীবন। দেশে ফিরতে যে দেরী হবে- তা বুঝে গেছে সে। তাই অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে জীবন কাটছে তার।
দেশে ফেরার আগ পর্যন্ত বিশাল এই জনগোষ্ঠীর থাকা-খাওয়াসহ নানা চাহিদা মেটানোই এখন বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
আইএসসিজি’র মুখপাত্র সৈকত বিশ্বাস বলেন, ‘জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যানের আওতায় আমরা চলতি বছরের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত আবেদন জানিয়েছিলাম ৯৫১ মিলিয়ন ডলারের। এরমধ্যে ৩১৫-১৬ মিলিয়ন ডলারের মতো পাওয়া গেছে। এটি দেখা যাচ্ছে ৩২% হয়।’
প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু না হওয়ায় বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের ব্যবস্থাপনায় দীর্ঘমেয়াদী কোনো পরিকল্পনাও করতে পারছেন না সংশ্লিষ্টরা।
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. আবুল কালাম বলেন, ‘পাসপোর্ট ডিপার্টমেন্ট একটি বড় কাজ করে ফেলেছিলেন। কিন্তু সেটি পরিবার ভিত্তিক না হওয়াতে সেগুলো আবার আমাদের করতে হচ্ছে। সেটি শুরু হয়েছে এরইমধ্যে। মিয়ানমারের দিক থেকে তাদের প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম সম্পন্ন হলে আমরা প্রত্যাবসনের কাজও দ্রুতই শুরু করতে পারবো।’
আইএসসিজি’র দেয়া তথ্যমতে, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া ১১ লাখ রোহিঙ্গার জন্য প্রতিবছর প্রয়োজন ৮ হাজার ৩১ কোটি টাকা। এরমধ্যে পাওয়া গেছে ২৬০০ কোটি টাকা।